সময় এখন ডেস্ক:
ডেঙ্গু প্র’তিরোধে এডিশ মশা দূর করার জন্য ব্যাপকভাবে ও’ষুধ ছিটানোর সামর্থ্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নেই বলে মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, নগরীতে ব্যাপকভাবে মশার ও’ষুধ ছিটানোর সামর্থ্য চসিকের নেই। এটি খুব বেশি এক্সপেন্সিভ (ব্যয়বহুল)। এছাড়া বাসাবাড়িতে ও’ষুধে ছিটানো কেউ পছন্দও করে না।
মঙ্গলবার দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের কে বি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে ‘চসিকের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে মেয়রের নিজের বাড়িতেই এডিশ মশা দূর করার জন্য ও’ষুধ ছিটাতে দেয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার বাড়িতে এডিস মশার ও’ষুধ ছিটাতে দেয়া হয়নি। কারণ বাড়িতে আমার চাচাতো ভাইয়ের নবজাতক সন্তান ছিল। এর মাধ্যমে সে ক্ষ’তিগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হয়েছিল।
মেয়র বলেন, এভাবে যদি নগরবাসী সচেতন না হয়, তবে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে একা ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব নয়।
নাছির উদ্দিন বলেন, আমরা চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি না। নগরের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কে ময়লা পরিষ্কার করবে, কখন করবে সব। অথচ নাগরিকরা যদি পরিচ্ছন্নতাকর্মী চলে যাওয়ার পরে রাস্তায় ময়লা ফেলে যায়, আর সে জন্য সিটি কর্পোরেশনকে গালি দেয়া হয়, তাহলে গালি শোনা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।
প্রসঙ্গত, আইনত নাগরিকদের মশার হাত থেকে রক্ষায় কোনো সংস্থার ওপর আলাদা করে দায়িত্ব অর্পিত নেই। তবে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯-এর ৩য় তফসিলের ১নং অনুচ্ছেদে ‘জনস্বাস্থ্য’ বিষয়ে যে ক্ষমতা, তার আলোকে মশক দূরীকরণে ব্যবস্থা নিতে পারে চসিক।
তাছাড়া নগরীতে চসিকই মশক দূরীকরণে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল তার জন্মলগ্ন থেকে। এ খাতে প্রতি বছর সংস্থাটির বরাদ্দ থাকে। চলতি অর্থবছরেও সাড়ে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ফলে নগরীতে মশার উ’ৎপাত বৃদ্ধির দায় এড়ানোর সুযোগ নেই সংস্থাটির।
নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের সাধারণ লোকজন জানান, মশক দূরীকরণে দৃশ্যমান তৎপরতা নেই চসিকের। মশার ও’ষুধ ছিটাতেও তারা দেখছেন না।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রতি বছর কোটি কোটি টাকায় কেনা মশার ও’ষুধগুলো যাচ্ছে কোথায়? এক্ষত্রে মেয়রের চোখ ফাঁকি দিয়ে পরিচ্ছন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোনো অ’নিয়ম করছে কি না সেটা খতিয়ে দেখার দাবি করেছেন কেউ কেউ।
গত ৪ বছরে মশক দূরীকরণ কার্যক্রমের জন্য ও’ষুধ ও ও’ষুধ ছিটানোর মেশিন ক্রয়ে সিটি কর্পোরেশনের খরচ হয়েছে ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের জন্য ও’ষুধ ক্রয়ে ইতোমধ্যে ১ কোটি ৩ লাখ টাকার ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে বলে জানিয়েছেন চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান ছিদ্দিকী।