সময় এখন ডেস্ক:
জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৯ এ সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন প্রস্তাব করেন যে, দেশে বঙ্গবন্ধু আইন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া প্রয়োজন। সেটা হবে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় হলে সেখান থেকে দক্ষ বিচারক পাওয়া যাবে।
প্রধান বিচারপতির সেই প্রস্তাব ভালো লেগেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৯ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুু আইন বিশ্ববিদ্যালয়-সংক্রান্ত প্রধান বিচারপতির প্রস্তাবটি আমার খুব ভালো লেগেছে। এটা একটা নতুন প্রস্তাব। অনেক বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, এটা হবে না কেন?
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আইনমন্ত্রীকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে যা যা করণীয় তা করে ফেলেন। আমি বঙ্গবন্ধু আইন বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব।
জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৯ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রস্তাব মেনে নেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের কারণে বিচার বিভাগের ওপর চাপ কমছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইভ-টিজিং, পরীক্ষার আসনে ভুয়া পরীক্ষার্থী বসা, ভুয়াভাবে জমি দখ’ল করা, সন্ত্রা’সী, চাঁদা’বাজি, ভেজালকারী, পরিবেশ দূষণকারী ও হঠাৎ দ্রব্যমূল্যে বৃদ্ধিকারীদের বিরু’দ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করায় মানুষ খুশি হয়েছে। এতে বিচার বিভাগের ওপর চাপও কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মোবাইল কোর্টের বিষয়টি বিদেশেও প্রশংসিত হচ্ছে।
বিচার বিভাগে মহিলা বিচারপতি নিয়োগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্থান আমলে একটি আইন ছিল, সেটা হলো কোনো মহিলা বিচারপতি হতে পারবে না। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু নারীদের বিচারপতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতি প্রথমে একজন নারী বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমান অধিকার থাকতে হবে। তাছাড়া সমাজ এগোতে পারবে না।
বিচারপতিদের সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি জেলায় আমরা ভবন করছি বিচার বিভাগের জন্য। ২৮টি জেলায় জজ আদালত সম্প্রসারণ করা হয়েছে। যে সকল সরকারি সম্পত্তি বেদখ’লে আছে সেগুলো উদ্ধার করা হলে বিচারকদের আবাসনসহ বিচার কাজের সকল সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিচারপতিদের অনেক ক্ষেত্রে ভাতা ছিল না। আমরা ভাতার ব্যবস্থা করেছি। না চাইতেই আমরা বিচারপতিদের আবাসন সুবিধাসহ অনেক কিছু করে দিয়েছি। যেমন বিচারপতিদের জন্য যেসব ফ্ল্যাট করা হচ্ছে তা অন্য কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাটের চাইতে আলাদা। গাড়ির জন্য স্বল্প সুদে ঋ’ণের ব্যবস্থা করছি। বিচারপতিদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিরাপত্তা। আমরা নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করছি। এছাড়া আমরা বিচার বিভাগেই যাতে জুডিশিয়ারি চালু হয় সে ব্যবস্থা করছি। এ ব্যবস্থা চালু হলে সাধারণ মানুষও উপকৃত হবে। মামলার নকলসহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র দ্রুত পাবে।
এছাড়া তিনি ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিচার করার কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দু’র্ধর্ষ আসামিদের অনেক সময় ছি’নিয়ে নেওয়ার ভ’য় থাকে, সেক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেমন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব বিচার হতে পারে। তাতে ঝুঁ’কিও কমে যায়।
এদিকে, ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও রায় লেখার জন্য বিচারপতিদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল হক ও সচিব গোলাম সরোয়ার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার জেনারেল মোহাম্মদ আলী আকবর।
এ সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্টের বিচারপতি এবং সারাদেশ থেকে আগত বিচারকগণ এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
1.6K