সময় এখন ডেস্ক:
রাজধানী ঢাকাকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সেই লক্ষ্যে ঢাকাকে বাসযোগ্য এবং আরও উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে প্রক্রিয়াধীন আছে ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ)।
রাজউকের উদ্যোগে প্রণীত ড্যাপে থাকছে ভূমি পুনর্বিন্যাস, উন্নয়নস্বত্ব প্রতিস্থাপন পন্থা, ভূমি পুনঃউন্নয়ন, ট্রানজিটভিত্তিক উন্নয়ন, উন্নতিসাধন ফি, স্কুল জোনিং ও ডেনসিটি জোনিং। সংশোধিত ড্যাপে নতুন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে রাজউকের আওতাধীন এলাকার বিদ্যমান চেহারা বদলে যাবে। পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর অনেক ঘিঞ্জি ও অ-পরিকল্পিত এলাকা নতুন করে সাজানো হবে এর মধ্যমে।
সেই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় এবং ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জন্য সর্বোচ্চ ৮ তলা উচ্চতার ভবন নির্মাণের বিধান রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। খসড়া ড্যাপের বিভিন্ন জোনে ৮ তলা পর্যন্ত ভবন অনুমোদনের বিধান রাখা হলেও বিশেষ শর্তসাপেক্ষে আরও ২ তলা বেশি করা যাবে। এর চেয়ে বেশি উচ্চতার আবাসিক ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেবে না রাজউক। পাশাপাশি গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এবং সাভার পৌরসভার জন্য ৬ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের সুযোগ থাকবে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ২০১৬ থেকে ২০৩৫ সালের জন্য প্রণীত ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (খসড়া) বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ঢাকাকে মোট ১১ ধরনের ভূমি ব্যবহার জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের বোঝার উপযোগী করে মাতৃভাষা বাংলায় প্রণয়ন হবে সংশোধিত ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান বা বিশদ নগর অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)। রাজউকের ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য ২০ বছর মেয়াদের এ পরিকল্পনা ২০৩৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ভূমি পুনঃউন্নয়নের মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি জনপদকে ভেঙে নতুন করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে এর মাধ্যমে। সিঙ্গাপুর, জাপান, কোরিয়াসহ পৃথিবীর অনেক দেশ এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে পুরান শহরগুলোকে আধুনিক শহরে রূপ দিয়েছে। ৫ বছর মেয়াদে ড্যাপ মাস্টার প্ল্যান প্রথম প্রণয়ন হয়েছিল ২০১০ সালে। ২০১৫ সালে প্রথম ড্যাপের মেয়াদকাল শেষ হয়। বর্তমানে ওই ড্যাপের সময় বৃদ্ধি করে নগরীর উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে রাজউক।
এ বিষয়ে ড্যাপ প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, পুনঃউন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে শহর উন্নয়ন করা হয়েছে। এ জন্য আমরা ভূমি মালিকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু কেউ যদি আমাদের প্রকল্পের আওতায় না আসে তাকে নির্ধারিত উচ্চতার বেশি ভবন বানানোর অনুমোদন দেয়া হবে না। নির্দিষ্ট করা ভবনের উচ্চতার বাইরে কেউ ভবন নির্মাণ করলে তা হবে অ’বৈধ। এর ব্য’ত্যয় ঘটলে সেটা হবে নিয়মবহির্ভূত ভবন।
কোন এলাকায় কততলা ভবন নির্মাণ করা যাবে? এ বিষয়ে ড্যাপ সূত্রে জানা গেছে, সর্বোচ্চ ৮ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫টি এলাকায়। এছাড়া ৭ তলা ভবন, ৬ তলা ভবনের অনুমতি দেয়া হবে কিছু কিছু এলাকায়। তবে সিটি কর্পোরেশনের অধিকাংশ ওয়ার্ডেই ৪ ও ৫ তলা হিসেবে অনুমোদন দেয়া হবে।
খসড়া ড্যাপের বিভিন্ন জোনে ৮ তলা পর্যন্ত ভবন অনুমোদনের বিধান রাখা হলেও বিশেষ শর্তে আরও ২ তলা বেশি করা যাবে। এ বিষয়ে ড্যাপ সূত্রে জানা গেছে, সংশোধিত নতুন ড্যাপে কোনো ভবনমালিক যদি তার ভবনের ১টি ফ্লোর স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য বরাদ্দ রাখেন তবে নির্দিষ্ট উচ্চতার চেয়ে আরও ২ তলা বেশি নির্মাণের অনুমতি দেবে রাজউক।
এছাড়া ড্যাপের প্রস্তাবিত মানদ’ণ্ড অনুযায়ী কোনো এলাকায় বাড়তি স্কুল থাকলে সেখানে নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে ১ তলা বেশি অনুমোদন দেয়া হবে।
182