রোহিঙ্গাদের এনআইডি করে ৬৮ লাখ টাকা, ২ ইসিকর্মী গ্রেপ্তার

0

সময় এখন ডেস্ক:

৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা হস্তান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ৪ কর্মচারীসহ ৮ জনের বিরু’দ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই মামলায় চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে কর্মরত ইসির ২ অস্থায়ী কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে কমিশন।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার বাদামতলী মোড় থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরু’দ্ধে রোহিঙ্গাদের ভোটার ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেয়ার মাধ্যমে অ’বৈধ অর্থ আদায়েরও অভিযোগ আছে।

গ্রেপ্তারকৃত ২ জন হলেন- চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারী ঋষিকেশ দাশ এবং বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিরূপম কান্তি নাথ।

দুদক সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবরাহ করে অ’বৈধ অর্থ উপার্জনের বিষয়ে ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরু’দ্ধে চলমান তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এ মানি লন্ডারিং প্র’তিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪(২) এবং দ’ণ্ডবিধির ১০৯ ও দুর্নীতি প্র’তিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ১টি মামলা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওই মামলায় ইসির অফিস সহায়ক জয়নালসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাকি আসামিরা হলেন- জয়নালের স্ত্রী আনিছুন নাহার, মো. জাফর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সত্য সুন্দর দে, জয়নালের সহযোগী সীমা দাশ, তার ভাই বিজয় দাশ, চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অ’স্থায়ী অফিস সহায়ক ঋষিকেশ দাশ, বান্দরবান সদর উপজেলার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিরুপম কান্তি নাথ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখায় ৩৪ লাখ ৩ হাজার ১৫২ টাকা, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক আনোয়ারা শাখায় ২৮ লাখ ২০ হাজার ১৪৪ টাকা, প্রাইম ব্যাংক বাঁশখালী শাখায় ১ লাখ ১০ হাজার এবং এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ৬৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৬ টাকা হস্তান্তর ও স্থানান্তর করা হয়েছে। এ টাকা বাড়ি নির্মাণ কাজে ব্যয় করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন উদ্দিন বলেন, অ’বৈধভাবে রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবরাহ করে তাদের অর্থ উপার্জনের তদন্ত চলমান। ইতোমধ্যে তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। অ’বৈধভাবে উপার্জিত এ অর্থ বিভিন্নভাবে স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিং আইনেও অপরাধ করেছেন অভিযুক্তরা।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে লাকি আক্তার নামে এক রোহিঙ্গা নারীর কাছ থেকে এনআইডি পাওয়ার ঘটনায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিনসহ ৩ জনকে আটক করেন জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।

সে ঘটনায় ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এরই মধ্যে চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মুনীর হোসাইন খান ও পাবনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখসহ ৫ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে দুদক।

শেয়ার করুন !
  • 593
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!