সময় এখন ডেস্ক:
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’- কালজয়ী এই গানের রচয়িতা ও বিশিষ্ট কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানে না তাদের অস্তিত্ব একটা মানুষের ওপর নির্ভর করে। আর সেই মানুষটি হচ্ছেন শেখ হাসিনা।
আল্লাহ না করুক, কোনক্রমে তাকে যদি সরিয়ে দেয়া যায় আওয়ামী লীগ তাসের ঘরের মতো ভেঙে যাবে। এরপর একজন লোককেও আর বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করতে দেখা যাবে না। এখন অনেকেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের জন্য ব্যস্ত, কিন্তু তখন আর তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
গত রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত “সম্প্রীতি, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির বিজয়” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, আমি আওয়ামী লীগকে ভালোবাসি এবং সাপোর্ট করি বলেই বলছি— এই সরকার সম্পূর্ণভাবে গ্লোবাল ক্যাপিটালিজমের কাছে আত্ম’সমর্পণ করেছে। যার ফলে ক্যাপিটালিজমের যে ভালো দিক, এই গুণগুলো বাংলাদেশে আসেনি। এসেছে খারাপ দিকগুলো- যেমন চুরি, লু’ণ্ঠন, রে’প সব বেড়েছে।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগে জামায়াতের অনেকেই অনু-প্রবেশ করেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের অনেকেই আছে যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় খুশি হয়েছিলেন। আমি শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করে বলতে চাই, রাজাকারদের তালিকা করার আগে তাদের (অনু-প্রবেশকারী) তালিকা তৈরি করুন।
একাত্তরের ঘা’তকদের ফাঁ’সি দেয়া শেখ হাসিনা ছাড়া আর কারও পক্ষে সম্ভব হতো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ড. কামাল হোসেন সব সময় পাসপোর্ট রেডি রাখেন- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের এলিট ক্লাস আছে, কিন্তু জাতির কোনও ক্রাইসিসে তাদের পাওয়া যায় না। আমি ড. কামাল হোসেনকেও বলেছি- আপনি তো পাসপোর্ট রেডি রাখেন। যখনই কোনও সং’কট হয় তখনই দেশ ছেড়ে চলে যান। এখন আপনি গণতন্ত্র চান। এখন যে আপনি গণতন্ত্রের কথা বলছেন, ঢাকার বুকে বসে সেই কথা বলার অধিকার তো আপনি শেখ হাসিনার জন্যই পেয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু খুবই কোমল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন মন্তব্য করে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, একাত্তরের যু’দ্ধাপরাধীদের মৃ’ত্যুদ’ণ্ড দেয়ার সাহস বঙ্গবন্ধু দেখাতেন না। বঙ্গবন্ধু তাদের ফাঁ’সি দিতে পারতেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। খুবই কোমল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁর বিরু’দ্ধে যারা চক্রা’ন্ত করেছে তাদের সকলকে তিনি ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব প্রমুখ।