আ’লীগ অন্তপ্রাণ শতবর্ষী ইসহাক মাস্টার, দলের জন্য অসামান্য নিবেদন

0

মুক্তমঞ্চ ডেস্ক:

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি অনুভূতির নাম! এই অনুভূতি কলমে লেখা যায় না! এই অনুভূতি মুখে বলা যায় না! এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না! এই অনুভূতি চোখে দেখা যায় না! এই অনুভূতি ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না! এই অনুভূতি শুধু অনুভবই করা যায়!

ছবির এই বয়ঃবৃদ্ধের নাম ইসহাক আলী মাস্টার। বয়স প্রায় ১০০ বছর। তাতে কী, এখনো তিনি একজন নিবেদিতপ্রাণ আওয়ামী লীগ সদস্য। দলীয় যে কোন কর্মসূচিতে এই বয়সেও উপস্থিত হতে ভুল হয় না তাঁর। তাঁর কর্মস্পৃহা আর দলের প্রতি নিবেদন হার মানায় যে কোনো তরুণ কর্মীর স্পৃহাকেও।

এই অনুভূতিই তীব্র শীত ও প্রবল শৈত্যপ্রবাহের মাঝেও এই অ-শীতিপর মুরুব্বীকে টেনে এনেছে! টেনে এনেছে আজকের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’র ২১তম সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযু’দ্ধে কুষ্টিয়ায় যে ক’জন সংগঠক ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম তিনি। অথচ কোনদিন তিনি মুক্তিযো’দ্ধার স্বীকৃতি চাননি।

ছিলেন আব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও টানা ৪০ বছর সভাপতি এবং আব্দালপুর ইউনিয়নের রেকর্ড ৫ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। টানা ৪০টি বছর নিরলসভাবে খেটেছেন নিজ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে।

‘৭১ সালের পূর্বে বঙ্গবন্ধু যখন কুষ্টিয়া আসেন তখন হরিনারায়ণপুর বাজারে অনুষ্ঠিত জনসভায় মানপত্র পাঠ করেছিলেন তিনি। এছাড়াও তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত কুষ্টিয়া সফরে আসলে ইসহাক মাস্টারের নেতৃত্বেই অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান।

স্বৈ’রশাসক এইচ এম এরশাদ যখন দেশজুড়ে চালাচ্ছিল স্বৈ’রশাসন তখনকার স্বৈ’রাচারবিরো’ধী আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বুকে বো’মা বেঁধে জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে কুষ্টিয়া আসেন তিঁনি।

এছাড়াও হ্যাঁ-না ভোটের সময় নিজ ইউনিয়ন কেন্দ্রে না ভোটকে জিতিয়ে দেয়ায় তাঁর অবদান ছিল অন-স্বীকার্য। যার ফলস্বরুপ সেনাবাহিনী তাঁকে যশোর ক্যান্টনমেন্টে বেশ কিছুদিন আটকে রেখে অ-মানুষিক নির্যা’তন চালায় এবং পরবর্তীতে মৃ’তপ্রায় অবস্থায় মুক্তি দেয় যার ক্ষ’তচিহ্ন তিনি আজো বয়ে বেড়াচ্ছেন।

বর্তমানে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের একজন সম্মানিত উপদেষ্টা তিনি। দলীয় কর্মকান্ডের পাশাপাশি সমাজসেবায়ও রয়েছে তাঁর অপরিসীম অবদান।

আব্দালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতার সুবাদে নিজ ইউনিয়নে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার ব্রত নিয়ে গড়ে তুলেছেন আব্দালপুর হাইস্কুল এবং খাতের আলী ডিগ্রী কলেজ। নিজ ইউনিয়ন আব্দালপুর তো বটেই, পুরো কুষ্টিয়া জেলাতেই বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা এই মহান ব্যক্তি।

এ ছাড়াও নিজ গ্রাম ও ইউনিয়নে রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণে তাঁর রয়েছে অপরিসীম অবদান।

তাঁর ছোট পুত্র আরেক মুজিব আদর্শে উজ্জীবিত সৈনিক আলী মর্তুজা সিদ্দিকী খসরু, যিনি কলেজ জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তার নেতৃত্বেই শিবিরমুক্ত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল।

তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সুযোগ্য সভাপতি ছিলেন এবং বর্তমানে আওয়ামী রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে জড়িত।

মুক্তিযু’দ্ধের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত ইসহাক আলী মাস্টার তাঁর প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে ছুটে চলেছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত।

জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত প্রিয় সংগঠনের জন্য খেটে যেতে চান এই পরোপকারী, নির’হংকারী, স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতো’ভয় বঙ্গবন্ধু সৈনিক ইসহাক আলী মাস্টার।

এটাই তাঁর জীবনের শেষ ইচ্ছা।

মুরুব্বীকে শত সহস্র সংগ্রামী সালাম, অফুরান মুজিবীয় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভ কামনা।

লেখক: ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ
পরিচিতি: চিকিৎসক

শেয়ার করুন !
  • 13.4K
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!