রপ্তানির পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে, প্রবৃদ্ধির অবস্থান ২য়

0

অর্থনীতি ডেস্ক:

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আশা জোগাচ্ছে। চলতি বছরের ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) বাজারটিতে ৫০৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৯.৯৮ শতাংশ।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির পরিমাণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ ৩য় শীর্ষ স্থানে রয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির বিচারে শীর্ষ ৫ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে অবস্থান ২। অন্যদিকে বাজারটিতে চীনের তৈরি পোশাক রপ্তানি সাড়ে ৫ শতাংশের মতো কমে গেছে।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে ৭ হাজার ২৫১ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশটির উদ্যোক্তারা পোশাক আমদানি বৃদ্ধি করেছেন ২.৬২ শতাংশ।

পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ভালো থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে বাজার হিস্যা বেড়েছে বাংলাদেশে। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তারা যত পোশাক আমদানি করেন, তার ৬.৯২ শতাংশ বাংলাদেশি। জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাজারটিতে ১৭২ কোটি বর্গমিটার কাপড়ের সমপরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৫০৯ কোটি ডলার।

দেশটিতে পোশাক রপ্তানির পরিমাণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ ৩য় শীর্ষ স্থানে রয়েছে
তবে প্রবৃদ্ধির বিচারে শীর্ষ ৫ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে ২য়
জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাজারটিতে ৫০৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে
চলতি বছরের শুরু থেকে বাজারটিতে ভালো করেছে বাংলাদেশ

অটেক্সা জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বছর গণনা করে। সে অনুযায়ী তারা পরিসংখ্যান দেয়। আর বাংলাদেশে জুলাই থেকে অর্থবছর শুরু হয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ১ হাজার ৩০৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭.৭৪ শতাংশ কম। পোশাক রপ্তানি গত আগস্ট মাস থেকে কমছে।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি কমে যায়। ২০১৭ সালে ৫০৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হলেও তা ছিল ২০১৬ সালের চেয়ে সাড়ে ৪ শতাংশ কম। দীর্ঘ ১৫ মাস পর গত বছরের জানুয়ারিতে এই বাজারে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত গত বছর ৬.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ৫৪০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। চলতি বছরের শুরু থেকে বাজারটিতে ভালো করেছে বাংলাদেশ।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফয়সাল সামাদ সম্প্রতি বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে চীন থেকে ক্রয়াদেশ অন্য দেশে সরিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা। তা ছাড়া সংস্কারকাজে ভালো অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে বাজারটিতে রপ্তানি বাড়ছে। তবে আরও ৬ মাস না গেলে বলা যাবে না পোশাক রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে কি না।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বছরের প্রথম ১০ মাসে ২ হাজার ২১২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে চীন। তাদের এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে মাত্র ৫.৬২ শতাংশ বেশি। এরপরও চীন পোশাক রপ্তানিতে বেশ ভালোভাবেই ১ নম্বর অবস্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ২য় সর্বোচ্চ পোশাক রপ্তানিকারক ভিয়েতনাম রপ্তানি করেছে ১ হাজার ১৬৬ কোটি ডলারের পোশাক। তাদের প্রবৃদ্ধি ১০.৮৮ শতাংশ।

পরের অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটি ৩ হাজার ৮২০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। ৫ম শীর্ষ রপ্তানিকারক ভারত বছরের প্রথম ১০ মাসে ৩৫৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের প্রবৃদ্ধি ৬.৯০ শতাংশ।

শেয়ার করুন !
  • 438
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

এই ওয়েবসাইটের যাবতীয় লেখার বিষয়বস্তু, মতামত কিংবা মন্তব্য– লেখকের একান্তই নিজস্ব। somoyekhon.net-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এর মিল আছে, এমন সিদ্ধান্তে আসার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে somoyekhon.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো প্রকার দায় বহন করে না।

Leave A Reply

error: Content is protected !!