স্পোর্টস ডেস্ক:
প্রায় ৭ বছর পর স্টেডিয়ামে এসেছিলেন ‘বাংলার ম্যারাডোনা’ খ্যাত রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির। মান-অভিমান ভুলে গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এসে দেখেছেন প্রিয় মোহামেডান দলের ম্যাচ।
আরে রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির না?
কাছে গিয়ে স্পষ্ট হওয়া গেল। হ্যাঁ, ‘বাংলার ম্যারাডোনা’ সাব্বিরই তো। অনেক বছর পর ফুটবল মাঠে দেখা মিলল সাবেক এই তারকা ফুটবলারের। দেখা যাবেই বা কী করে? তিনি যে মাঠেই আসলেন প্রায় ৭ বছর পর। মান-অভিমানে দেশের ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু প্রিয় মোহামেডানে হাওয়া বদলের সময়ে ঘরে বসে থাকতে পারেননি। গতকাল প্রেস বক্সের ওপর ভিআইপি গ্যালারিতে বসে উপভোগ করলেন প্রিয় মোহামেডানের খেলা।
সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনো অভিযানের ধাক্কায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে বি’পর্যয় নেমে এসেছিল। নতুন মৌসুমে বাংলাদেশের ফুটবলে ‘মোহামেডান’ নামের কোনো দল থাকবে কী না সেটি নিয়েই দেখা দিয়েছিল শ’ঙ্কা। তবে কয়েক দিন যেতে না যেতেই সাবেক ফুটবলাররা হাল ধরে ক্লাবের ভাবমূর্তি ফেরানোর ল’ড়াইয়ে নেমেছেন। বাদল রায়, রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির, ইমতিয়াজ সুলতান জনির মতো সাবেক তারকা ফুটবলাররা দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর গতকালই ছিল মোহামেডানের প্রথম ম্যাচ।
সাম্প্রতিক বিচারে ফলটাও খারাপ হয়নি। ২ বছর পর হার এড়িয়ে মৌসুম শুরু করেছে ঐতিহ্যবাহী সাদা-কালোরা। মুক্তিযো’দ্ধার বিপক্ষে ১ গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ১-১ ড্র। তবে সাদা-কালোদের রঙিন পারফরম্যান্স উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।
তারুণ্যনির্ভর দলটি খেলার আগে আর হারবে না, এই বিশ্বাস নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছেন সাব্বির, ‘দলটা একদম শেষ মুহূর্তে গড়া হয়েছে। তেমন ভালো খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে প্রথম ম্যাচ অনুযায়ী দলের মধ্যে বেশ কিছু ইতিবাচক বিষয় লক্ষ্য করা গিয়েছে। শেষ মিনিট পর্যন্ত ল’ড়াই করার সামর্থ্য আছে খেলোয়াড়দের।’ তবে দেশের ফুটবলের সার্বিক মান তলানিতে নেমে যাওয়ার ক’ষ্টটা লুকাতে পারলেন না।
কত দিন পর মাঠে আসলেন? একটু ভেবে চিন্তে বললেন, ‘প্রায় ৭ বছর পর মাঠে আসলাম। এত দিন দেশের ফুটবল থেকে একেবারেই দূরে সরে ছিলাম।’
ফুটবল যে সাব্বিরকে ‘বাংলার ম্যারাডোনা’ বানিয়েছে, তার এত দিন মাঠে না আসার কারণ কী? বললেন মান-অভিমানের কথাগুলো, ‘ফুটবলে ভালো পরিবেশ নেই। বাংলাদেশ জাতীয় দল এখন র্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে। ফুটবল উন্নয়নে কোনো পরিকল্পনা চোখে পড়ে না। মোহামেডান ক্লাব ভালো দল গঠন করে না। সবচেয়ে বড় কথা ক্লাবের পরিবেশও ছিল খারাপ। প্রায় ১০ বছর পর মোহামেডান ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলাম। সবার প্রচেষ্টায় এবার মোহামেডান একটা ভালো পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। অনেক দিন পর আমরা সাবেক ফুটবলাররা একত্রিত হয়েছি। এবার তো দলবদলের আগে আমরা সুযোগ পাইনি, তাই বেশি কিছু করতে পারলাম না। আশা করি ভবিষ্যতে মোহামেডান স্বরূপে ফিরে আসবে।’
সাব্বিরের মতোই মনোবাসনা দেশের আরও লাখ লাখ মোহামেডান সমর্থকদের, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।