সময় এখন ডেস্ক:
রাজধানীতে অনুষ্ঠিত শোকরানা মাহফিল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা এবং হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে স্বাধীনতা পদক দেয়ার দাবি উঠেছে।
বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের প্রধান ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ এসব দাবি জানান। শোকরানা মাহফিলের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল গণভবনে আল্লামা শফীর নেতৃত্বে শীর্ষ আলেমদের উপস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয়ের মাস্টার্সের সমমান দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ-সংক্রান্ত বিলটি সংসদে পাস হয়। এর মাধ্যমে কওমি মাদ্রাসার লাখ লাখ শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়।
রবিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কওমি মাদ্রাসাগুলোর ছয় বোর্ডের সমন্বিত সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশ আয়োজিত এই ‘শোকরানা মাহফিল’ অনুষ্ঠিত হয়। হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের সবই দিয়েছেন, আপনার প্রতি আমাদের আরও একটু চাওয়া আছে। আমরা আপনার কাছে ইমামদের পাঁচ হাজার টাকা এবং মুয়াজ্জিনদের তিন হাজার টাকা ভাতা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
মাসঊদ বলেন, ‘দেশের সব ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে ভাতা দিলে সরকারের ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা খরচ হবে, যা খুবই কম। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আপনি মানবতা দেখিয়েছেন। আপনি বলেছেন ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব হলে আট লাখ মানুষের খাওয়ার অভাব হবে না। আমরা চাই আমাদের অন্যান্য দাবির মতো আপনি ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতা প্রদানের দাবিও মেনে নেবেন।’
এ সময় আল্লামা মাসঊদ বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো আলেমকে স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়নি। আমরা চাই আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাহ আহম্মদ শফীকে আপনি স্বাধীনতা পদক প্রদান করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির ভাষণে কওমি মাদ্রাসার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন। তবে সেখানে স্বাধীনতা পদক দেয়ার দাবির ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি তিনি।
মাহফিলে বেশি কিছু দাবিও তুলে ধরা হবে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা, ইসলামবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করা এবং আলেম, ইমাম ও ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হয়রানির মামলা প্রত্যাহার করা। বিশেষ করে হেফাজতের ৫ মে শাপলা চত্বরে সমাবেশকে কেন্দ্র করে হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাইআতুল উলয়ার একাধিক নেতা।
সমাবেশে দাবি উত্থাপন প্রসঙ্গে শনিবার মাওলানা মাসঊদ বলেন, ‘সেরকম কোনও বিষয়ে সম্মিলিত পরামর্শ হয়নি। তবে জামায়াত নিষিদ্ধকরণ, কাদিয়ানিদের মিথ্যাচার প্রচারের বিরুদ্ধে আলোচনা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়েও ভালো ভূমিকা রাখতে পারবেন।’