সময় এখন:
মার্কিন দূতাবাসগুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অন্যতম কাজ হলো সংশ্লিষ্ট দেশটির রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ওপর গোপনে অনুসন্ধান চালানো। তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তাদের নামে আলাদা আলাদা ডোশিয়ে (ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত ফাইল) তৈরি করা। সেই আলোকে ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অনেকের ডোশিয়ে ওয়াশিংটনে পাঠানো হয় দূতাবাস থেকে। তৎকালীন রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে. টমাস সাক্ষরিত তারবার্তায় খোদ প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার পুত্র তারেক রহমান ছাড়াও মন্ত্রিসভার অনেকের সম্পর্কে স্পর্শকাতর তথ্য ছিল।
উইকিলিকসের ফাঁস হওয়া সেই গোপন তারবার্তায় বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের দুর্নীতি ও অপকর্মের তথ্য রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে মার্কিন সংস্থার পাঠানো কনডমের চালান ঘুষের আশায় আটকে দেন মোশাররফ। মার্কিনিদের চাপের পর বিস্তর জলঘোলা করে সেই কনডমের ছাড়পত্র দেন মোশাররফ। তবে এজন্য তিনি বড় অঙ্কের ঘুষ নিয়েছিলেন বলে জানা যায়। নিজ দেশের জন্য লাভজনক ইস্যুতেও ঘুষের দাবিতে বিদেশি সহায়তা আটকে দেয়ার রেকর্ড বিএনপির জন্য নতুন কিছু নয়। মার্কিনিরা এই ঘটনাকে মোশাররফের “কনডম কেলেঙ্কারি” হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল সেসময়।
ছবি: উইকিলিকস-এর তারবার্তা
তারবার্তায় যা রয়েছে-
তারবার্তা নং- ০৫, ঢাকা ২২৪৩, তারিখ- ১১ই মে, ২০০৫, সময়- ০২:১৬ পূর্বাহ্ন, শ্রেণি- সিক্রেট
ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কারণে তার আস্থাভাজন সুবিধাভোগীদের একজন এই মোশাররফ। খালেদা জিয়ার প্রথম মেয়াদের শাসনকালে ছিলেন জ্বালানিমন্ত্রী, দুর্নীতিগ্রস্ত চীনাদের সঙ্গে কয়লাখনি-বিষয়ক চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট; খালেদার কিচেন কেবিনেটের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো জয়ী হন ১৯৯১ সালে; শিক্ষায় ভূতত্ত্ববিদ এবং একসময় তারেক রহমানের শিক্ষক ছিলেন, অন্য যেকোনো মন্ত্রীর চেয়ে তার ওপর খালেদা জিয়ার আস্থা সম্ভবত বেশি। ব্যতিক্রমী রকমের দুর্নীতিবাজ বলে জানা যায়। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) অর্থায়নে সরবরাহকৃত কনডমের একটি চালান তিনি ঘুষের প্রত্যাশায় আটকে রেখেছিলেন কয়েক মাস।
হ্যারি কে. টমাস