সময় এখন ডেস্ক:
মাস্ক কেলে’ঙ্কারির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের (সিএমএসডি) ৬ কর্মকর্তাসহ ৭ আসামির দেশত্যাগে নিষে’ধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৫ অক্টোবর) দুদক সচিব দিলোয়ার বখ্ত সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
আসামিরা হলেন- কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের (সিএমএসডি) উপ-পরিচালক ডা. জাকির হোসেন, সহকারী পরিচালক (স্টোরেজ অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন) ডা. শাহজাহান সরকার, চিফ কো-অর্ডিনেটর ও ডেস্ক অফিসার জিয়াউল হক, ডেস্ক অফিসার (বর্তমানে মেডিক্যাল অফিসার, জামালপুর) সাব্বির আহমেদ, স্টোর অফিসার (পিআরএল ভোগরত) কবির আহমেদ এবং সিনিয়র স্টোর কিপার ইউসুফ ফকির এবং জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক।
ইতোমধ্যে জামায়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাককে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার করে দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন একটি দল। বর্তমানে তাকে রিমান্ডে জেরাের বিষয়টি চলমান রয়েছে।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের (সিএমএসডি) ৬ কর্মকর্তা ও জামায়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাকের বিরু’দ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, চিকিৎসক-নার্স এবং অন্যদের করোনা থেকে রক্ষার জন্য এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের জন্য জেএমআই গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছিল সরকার। জেএমআই গ্রুপ ২০ হাজার ৬১০টি মাস্ক সরবরাহ করে। পরে দেখা যায়, ওই মাস্কগুলো এন-৯৫ মাস্ক নয়। সেগুলো ১০টি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হয়েছিল।
নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনা, সেসব সরঞ্জাম বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট, অ’বৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরু’দ্ধে গত ১০ জুন অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
উল্লেখ্য, করোনার শুরুতেই চিকিৎসকদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তড়িঘড়ি করে জেএমআইকে টেন্ডার না করেই সরাসরি মাস্ক কেনার দায়িত্ব দেয়। কেন টেন্ডার ছাড়াই এ দায়িত্ব দেওয়া হলো সেটি রহস্যময় বটে।
এন-৯৫ মাস্ক বাংলাদেশে তৈরী হয় না। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরী হয়। জেএমআই কোনো এলসি বা আমদানী না করেই তারা তাদের গাজীপুরের ফ্যাক্টরিতে অনুরূপ নকল মাস্ক উৎপাদন করেছে বলে তদন্তে জানা গেছে। সেই নকল মাস্কগুলো এন-৯৫ মুদ্রিত প্যাকেটে ভরে তারা বিভিন্ন হাসপাতালে সরবারহ করে।
এর মধ্যে মুগদা হাসপাতালের পক্ষ থেকে এই মাস্ক যে আসল মাস্ক না- তা জানিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জেএমআই এর আপস রফায় ঐ মাস্কগুলো প্র’ত্যাহার করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তখন সাফাই গায় জেএমআই-এর পক্ষে। জানায়- ভুলক্রমে এসব মাস্ক এন-৯৫ এর প্যাকেটে দেয়া হয়েছিল! মুগদা হাসপাতালের মহাপরিচালককে বদিল করা হয় একই সময়, যিনি নকল মাস্ক নিয়ে কথা বলেছিলেন।