স্পোর্টস ডেস্ক:
ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতির কিংবা রাষ্ট্রীয় সংক’টের সম্পর্ক বহুদিনের। বারবার ক্রিকেট হয়ে উঠেছে প্র’তিবাদের হা’তিয়ার। ‘ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতি না মেশালে’ একাত্তরের ফেব্রুয়ারিতে রকিবুল হাসান নিজের ব্যাটে ‘জয় বাংলা’ স্টিকার লাগিয়ে মাঠে নামতেন না।
ক্রিকেট প্র’তিবাদের ভাষা না হলে দক্ষিণ আফ্রিকা বর্ণ’বাদের দায়ে নিষি’দ্ধ থাকত না। ‘ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতি মেশাবেন না’- এই বাক্যটি তাদের হা’তিয়ার যারা স্বাধীন বাংলাদেশে বসে পাকিস্থানের স্বপ্ন দেখে!
হ্যাঁ, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরেও বাংলাদেশে একটি প্রজন্ম গড়ে উঠেছে, যারা পাকিস্থানকে স্বপ্নের রাজ্য হিসেবে দেখে। পৃথিবীতে অনেক মুসলিম দেশ থাকলেও কেবলমাত্র পাকিস্থানের ক্ষেত্রেই তাতদের ‘মুসলমানিত্ব’ ফুটে উঠে।
সুতরাং, এই পাকিপ্রেমীরা যে বাংলাদেশের পাকিস্থান সফরে আনন্দে আটখানা হয়ে উঠবে, তা বলে দিতে হয় না। একই কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সম্পদ মুশফিকুর রহিম পাকিস্থান সফর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলে তাকে অ’শ্লীল ভাষায় আক্র’মণ করতেও ছাড়ে না এসব কথিত ‘ধার্মিক’রা!
বিসিবিকে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্থান সফর থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। জ’ঙ্গিবাদে ভরপুর দেশটিকে তিনি নিরাপদ মনে করছেন না। মুশফিকের পরিবারও এতে আ’পত্তি জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন স্বয়ং বলেছিলেন, কোনো ক্রিকেটারকে জোর করা হবে না। মুশফিককে বাইরে রেখেই আজ ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা হয়ে গেছে। এরপর সোশ্যাল সাইটে ব্যক্তিগত স্ট্যাটাসে কিংবা বিভিন্ন মিডিয়ার ফ্যানপেইজে মুশফিককে উদ্দেশ্য করে শুরু হয়েছে গা’লাগাল। মুশফিক কেন ‘পূণ্যভূমি’ পাকিস্থানে গেল না- এটাই তার অনেক বড় অপরাধ!
‘পাকিপ্রেমী’ বাঙালিদের সেইসব গা’লাগাল সংবাদপত্রে প্রকাশযোগ্য নয়। অনেকে তো তাকে ‘ভারতের দালাল’ও বানিয়ে দিচ্ছে। তবে এর বিপরীত চিত্রও আছে। মুশফিকের মতামতের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন অসংখ্য ক্রিকেটপ্রেমী। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের বড় একটি অংশ তো মুজিববর্ষে পরপর ৩ বার পাকিস্থান সফরে যাওয়ারই বিরু’দ্ধে।
তাদের মতে, পাকিস্থান নিজেদের দেশে ক্রিকেট ফেরাতে বাংলাদেশকে ব্যবহার করছে। এতদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ‘হোম গ্রাউন্ড’ বানিয়ে পাকিস্থান প্রায় সব দলের বিপক্ষেই সিরিজ খেলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে তো খেলেনি!
কালেরকণ্ঠ